মোঃ লুৎফুর রহমান | শুক্রবার, ১০ মার্চ ২০১৭
“প্রেমের মরা জলে ডুবে না”। সত্যিইতো তবে
কারাগারের ওই অন্ধকার অার নোংরা পরিবেশে ঠিকই প্রেমের মরা ডুবে যায়।বদরুল দীর্ঘ অাট বছর খাদিজার বাড়িতে লজিং মাস্টার ছিল।খাদিজার সাথে প্রেম হলো,ভাব হলো,অনেকটা কাছাকাছি হয়ত অারো অনেক কিছুই হয়েছিল।যাই কিছু হোক না হোক অন্তত তাদের ভালোবাসা অনেক গভীরে গিয়েছিল।এটা সত্য।
বদরুল এক সময় খাদিজার বাড়ি ছেড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল।জীবন শুরু করে।তারপরও বদরুল-খাদিজার লীলা খেলা বন্ধ হয়নি।দু’জনেই দু’জনকে উপভোগ করলো,মজা,মাস্তি সবই
চলল।হঠাৎ করে খাদিজা নতুন নাগরের সন্ধানে বদরুলকে অস্বীকার করলো।অার অমনিই একপর্যায়ে বদরুল খাদিজাকে শেষ করে দিতে গিয়ে নিজেই শেষ হয়ে অন্ধকার প্রকোষ্ট কারাগারে চলে গেল।
রুবেল হ্যাপির সাথে প্রেম করে গোপন অভিশারে মিলিত হয়ে উভয়ের চরম সুখের পরশে হয়ত অবৈধ সন্তানও হ্যাপি গর্ভে ধারন করে সেই সন্তানকে নষ্ট করে ফেলে দিতে পারে।রুবেল হ্যাপিকে উপভোগের পর ছেড়ে দিয়ে নতুনত্ব খুৃঁজতে শুরু করল অার অমনি হ্যাপি ধর্ষনের মামলা দিয়ে রুবেলকে কারাগারে পাঠাল।
সানি একটি মেয়ের সাথে প্রেম,ভালোবাসার অাবেগের
মূহুর্তে মজা,মাস্তি সব করলো।ফ্ল্যাট বাসা নিয়ে লিভ
টুগেদার করে নতুনত্বের খুৃৃৃঁজে সানি ওই মেয়েটিকে
ছেড়ে দিল।এতে করে মেয়েটি শারীরিক শোষন তথা
ধর্ষনের অভিযোগ এনে সানির ক্যারিয়ার শেষ করে
কারাগারে পাঠিয়ে দিল।
খাদিজা,হ্যাপি অার সানির গার্লফ্রেন্ড বা বউ যা করল তা অামি শতভাগ সমর্থন করি।পর্দার অাড়ালে অন্ধকার কক্ষে গিয়ে নর-নারী দু’জনের সম্মতিতে উভয়েই এমন সুখের রাজ্য উপভোগের পর কেন একজন অারেকজনকে ছেড়ে যাবে? তাই হ্যাপিদের সিদ্বান্ত সঠিক ছিল।
মহাশয় একজন ছেলে যখন একজন মেয়ের সাথে প্রতারনা করে তখন ছেলেটির বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন বা ধর্ষনের মামলা হয়।ছেলেটিকে অন্ধকার প্রকোষ্টে জেলখানার চার দেয়ালে থাকতে হয়,যাবজ্জীবন,ফাঁসি সব কিছুই হয়।হ্যাঁ ছেলেটির প্রতারনায় এমন শাস্তি হওয়াই উচিত।
কিন্তু কোন মেয়ে যদি ছেলের সাথে প্রতারনার অাশ্রয়
নেয়।পতিতাদের মত অন্যান্য ছেলেদের সাথে
মেলামেশা শুরু করে,বয়ফ্রেন্ড বা স্বামীর অবাধ্য হয়।
সর্বোপরি মেয়েটি ভালোবাসা পাগল ছেলেটিকে
সাগরের মাঝে ফেলে প্রতারনার অাশ্রয় নিয়ে
ছেলেটিকে ছেড়ে চলে যায়।তখন ছেলেটি কোন
অাইনের অাশ্রয় নিতে পারে? ছেলের বিরুদ্ধে প্রতারনার মামলা হয় কিন্তু মেয়ের বিরুদ্ধে কি বিশ্বাসঘাতকতা তথা প্রতারনার মামলা করার সুযোগ অাছে? না কখনোই নেই।তাহলে ছেলেটি কী করবে।
নারী নির্যাতন অাইনে মামলা অাছে পুরুষ নির্যাতন অাইনে কোন মামলা নেই।অার তাইতো ছেলেটি বাধ্য হয়ে অাইন নিজের হাতে তুলে নেয়।ছেলেটি যখন মেয়ের প্রতারনা বুঝতে পারে,মেয়ের নোংরামি,নষ্টামী
,বেহায়াপনা বুঝতে পারে তখন ছেলেটি হিতাহিত জ্ঞান
হারিয়ে কোন অাইনের অাশ্রয় নেয়ার সুযোগ না থাকায় তার ওই সোনা পাখিকে নিজ হাতে শাস্তি দেয়ার চেষ্টা করে।
ছেলেটির ভালোবাসার গভীরতা এত বেশিই থাকে যে
কিনা তার জীবন সাথীকে অন্য কারো হতে দিতে
কিছুতেই রাজি না।তখন তার চোখের সামনে ভাসে নির্জনে বসে গোপন অভিসারে মিলিত হওয়ার কথা,ফুসকা খেয়ে বিল দেয়ার কথা,জীবনের মূল্যবান সময়গুলো তার পিছে ব্যয় করার কথা,জীবন ঝুঁকি নিয়ে মেয়েটিকে ভালোবাসার কথা,জানু জানু বলে যে তাকে ঘুম পাড়াতো তার কথা,রাস্তায় হাতে হাত রেখে মাইলের পর মাইল হেঁটে যাওয়ার কথা।
নিজে উপোস থেকে,টাকা বাঁচাতে গিয়ে রিক্সা-গাড়িতে না চড়ে মাইলের পর মাইল পায়ে হেঁটে ওই লাইফ
পার্টনারের হোস্টেলের সামনে গিয়ে মেয়েটিকে
ওই বাঁচানো টাকা দিয়ে ফুসকা খাওয়ানোর কথা।এমন সব কল্পনাকরতে করতে বদরুলরা হিংস হয়ে নিজ জীবনের মায়া ত্যাগ করে নারী নামধারী খাদিজাদেরকে ক্ষত-বিক্ষত করে।
প্রতারনা হচ্ছে বিষাক্ত সাপের ন্যায়,তা যে দিক দিয়ে যায় সে দিক শেষ করে দেয়।
পুনশ্চ:তবে যত কিছুই হোক বদরুল যা করেছে তা অামি কোন অবস্থাতেই সাপোর্ট করিনা।খাদিজাদের
বিশ্বাসঘাতকতার কারনেই বদরুলদের সৃষ্টি হয়।অার কোন বদরুলের সৃষ্টি তা কোন অবস্থাতেই চাইনা।তবে নারী নির্যাতন অাইনের মত পুরুষ নির্যাতন অাইন অার নারী দিবসের মত পুরুষ দিবস পালনের ঘোষনা এখন সময়ের দাবী।তবেই বন্ধ হতে পারে বদরুলদের এমন গর্হিত কাজ।
লেখকঃ
মোঃলুৎফুর রহমান
সহ-সভাপতি
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
লেখকের ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত